শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

হারিয়ে তোমায় খুঁজে ফিরি.......

টিং টিং টিং........ঘণ্টা বেজে উঠার পর ফারহানের ঘোর হঠাৎ ভেঙ্গে গেল। সারারাত অঘুমা থাকার পর এখন ক্লাস করতে আসা তার উপর আবার টিচারের বোরিং লেকচারের চেয়ে ঘুমানোটাই তার বেশি পছন্দ হল। টিফিন ছুটির পরও সে ঘুমে ব্যস্ত। হঠাৎ ঠাস!!!! কে কে বলে আচমকা দাড়িয়ে গেল ফারহান। কে যেন ওর মাথায় খুব জোরে থাপ্পর মেরেছে। আশেপাশে তো কাউকে দেখছে না কিন্তু কিছু দূরে বসে থাকা এক ক্লাসমেটের দিকে চোখ পরল। হাসছে ; একবার ফারহানের দিকে তাকিয়ে আর একবার দরজার দিকে তাকিয়ে। বুঝতে পারল যে কাজটা করেছে সে কোথায় লুকিয়ে আছে তাই আর ডানে বামে না তাকিয়ে সোজা দরজার কাছে চলে এলো ইনস্ট্যান্ট প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। দরজার কাছে এসে সমস্ত শক্তি এক করে দিল এক লাথি। আউউউউউ !!!!!! দরজার ওপাশ থেকে আসা চিৎকার শুনে ক্লাসে থাকা অন্যরা রীতিমতো ভয় পাবার উপক্রম। ফারহানতো এতক্ষণ হাসছিল কিন্তু ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা মানুষটাকে দেখার পর কোঁকড়া চুল সব সাথে সাথে খাঁড়া হয়ে গেল,হাসিটাও কোথায় যেন উধাউ হয়ে গেল। তবে আশেপাশের সবাই ইতিমধ্য হাসাহাসি শুরু করে দিলো।না হেসে যাবে কোথায় , মানুষটি যে আর কেউ ছিল না বরং ফারহানের গার্লফ্রেন্ড তিন্নি ছিল। opsssss !!!!!!
ফারহান আর তিন্নি স্কুলজীবন থেকেই একে অপরকে চেনে। পরিচয়টা ঝগড়া দিয়ে শুরু হয়েছিলো বলে পুরো স্কুলজীবনটাই কেটে গেল ঝগড়া আর মারামারিতে, স্কুলজীবনও শেষ হল শত্রুতার মধ্য দিয়ে।পরে অবশ্য একই কলেজে ভর্তি হবার পরও তাদের ঝামেলা হতো।ফারহান খুব দুষ্টু স্বভাবের, সুযোগ পেলেই লেজ ধরে টানাটানি শুরু করে দেয়।তিন্নি কিছুটা ভাব দেখাতো আর কথায় কথায় খুব রেগে যেতো কিন্তু সেও কম দুষ্টু ছিল না। এদের শত্রুতার গল্পের মোড় হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ালো এক ঈদের দিন। কাকতালিওভাবে ফারহান ও তিন্নির বাবা বন্ধু বিধায় এক ঈদের দিন তারা তিন্নিদের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলো। ঐ সুবাদে তাদের দেখা,তারপর ফ্যামিলি চাপে ভালভাবে কথা,অতঃপর ভাল বন্ধু হয়ে যাওয়া।কালের আবর্তনে আজ তাদের সম্পর্কটা আরও গভীর, একে অপরকে খুব ভালবাসে।কিন্তু মারামারি করার অভ্যাসটা যেন গেল না। গত কয়েকমাস আগে যখন ফারহান তিন্নিকে প্রপোজ করেছিল তখন রাগের মাথায় সে হাতের মোবাইলটা দিয়ে মেরে ফারহানের মাথা ফুলিয়ে দিয়েছিলো। কারণটা খুব একটা অস্বাভাবিক ছিল না, ফারহান এত দেরিতে কেন ওকে I love u বলেছিল এতেই সে ক্ষেপে গিয়েছিলো,পরে আবার নিজ হাতে বরফ লাগিয়ে দিয়েছিলো। তারপর থেকে ফারহান ওকে খুব ভয় পায়,এক আধটু দুষ্টুমি করে তবে অনেক সাবধানে।

Post Comment

ভালবাসার খোঁজ...

একচোখ খুলে তূর্ণাকে দেখে আবার পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো আসিফ ।
কি যন্ত্রণা ! উঠো না কেন ? সেই কখন একবার চা দিয়ে গেছি । ঠাণ্ডা বানায় ফেলছো । আবার বানায় আনছি , তুমি এখনো ঘুমাইতেছো ।এখন যদি না উঠছো তোমার খবর আছে ।

আশ্চর্যতো ! প্রতিদিন সকালে এক কাহিনী । ঘুমাইতে দিবা নাকি ?

অফিস কি আমি করবো ?

আসিফ আর সাড়া দেয়না ।

দিলাম কিন্তু ঢেলে ।
বলেই একটানে চাদরটা টেনে সরিয়ে দিলো তূর্ণা । লাফিয়ে উঠলো আসিফ ।
দ্যখো , ভালো হবেনা বলছি । ঠাণ্ডা লাগে । চাদর দাও ।

দিবো না । করো যা খুশি ।

বিছানা থেকে উঠতে যায় তূর্ণা । পেছন থেকে হ্যাঁচকা টানে আসিফ নিজের কোলের উপর শুইয়ে দেয় তূর্ণাকে ।

Post Comment

খুকির ডায়েরি কিংবা ডাহুক পাখির গল্প

সিগারেটের জন্য পকেটে হাত দিয়ে হতভম্ব হয়ে যায় আতিক। গতকাল তার খোলা প্যাকেটে চারটি সিগারেট ছিল। ইদানিং সিগারেট কমিয়ে দিয়েছে সে। দিনে সাত থেকে আটটার বেশি খাওয়া হয় না। ভেবেছিল আজ নতুন প্যাকেট কিনবে, কিন্তু পকেটে হাত দিয়ে দেখে আস্ত নতুন একটি সিগারেটের প্যাকেট। আজকাল অনেক কিছুই মনে থাকে না তার। সে নিজেও বুঝতে পারছে যে পার্থিব ব্যাপারগুলোয় সে আনমনা। কিন্তু সিগারেট কিনে ভুলে যাওয়ার মত এতটা আনমনা সে নয়। প্যাকেট খুলে মাঝ থেকে একটি সিগারেট ধরিয়ে আবার হাটতে শুরু করে সে।


আতিক এখন ইন্দিরা রোডের থেকে পশ্চিম রাজাবাজারের দিকে একটি গলি দিয়ে হাটছে। হাটছে আর দু’পাশের বাড়িগুলোর দিকে তাকাচ্ছে। না বাড়ি ঘরের দিকে তাকিয়ে থাকা তার শখ না। সে বোর্ড খুজছে,  যে বোর্ডে কালো রঙয়ের উপরে সাদা রঙে লিখা থাকেTo-let. এইমাসে আতিকের একটি চাকরি হয়েছে, খুব ভালো বেতনের চাকরি। ভার্সিটি থেকে বেড়িয়েছে চার বছর হলো। এই চার বছরে অন্তত চার’শ ইন্টারভিউ সে দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু কোথাও কোন কাজ হয়নি। শেষে চার বছর পরেই একটা চাকরি হয়ে গেলো, তাও আবার খুব ভালো বেতন। চাকরির জন্য মামা চাচার ধরনা দিতে হয়নি ভেবেই কেমন যেন উৎফুল্ল লাগছিল তার। এবার শুধু একটি ভালো বাসা পেলেই হাপ ছেড়ে বাঁচবে। 

Post Comment

" এই তো প্রেম "

১০-১০-১০
সন্ধ্যাটা আসি আসি করছে । একটু পরই ঝুপ করে সূর্যটা ডুববে....অদ্ভূত একটা ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে আমার মন। অফিস আওয়ার শেষ হবার আগেই আজ বেরিয়ে এসেছিলাম। যত দ্রুত সম্ভব বাসায় যেতে হবে যে আমাকে। কাল রাতে কথাটা আসিফকে বলতেই পারিনি। আর সকালে তাড়াহুড়ার চোটে বলাই হয়নি। যথন জানলাম তখন অনেক রাত,হঠাত্‍ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় বারান্দায় বসে গান শুনছিলাম। ফোনটা অন করতেই মেসেজটা এলো। আমি তো খুশিতে স্থান-কাল-পাত্র ভুলে একটা ছোটখাটো চিত্‍কারই দিয়ে উঠলাম। তারপর ছুটে ঘরে এলাম। গভীর ঘুমে ওকে দেখে এতো মায়া লাগছিলো ! ওর কপালে আলতো একটা চুমু খেয়ে অনেকটা সময় ওর পাশে বসে রইলাম ।
সকালে শুধু গাড়িতে বসে এতটুকু বলেছিলাম, ' আজ একটু তাড়াতাড়ি বাসায় এসো । কাজ আছে । '

কিন্তু ,কথাটা এমন সাদামাটা ভাবে বললে হবে?? সকালে শাহবাগে অনেক গোলাপ একসাথে পাওয়া যায়। এখন প্রায় সাড়ে ৩টা বাজে। কয়টা পাওয়া যাবে জানি না, আর পাওয়া গেলেও কতটা তাজা আছে কে জানে? তবু ও গাড়িটা ঐদিকেই ঘুরালাম।
মেয়েরা এমনিতেই খুঁতখুঁতানি টাইপের হয় আর আমি তো আর এক ডিগ্রী উপরে। এই দোকান থেকে দুইটা তো ঐ দোকান খেকে তিনটা এভাবে কোনোমতে ১০০টা লাল গোলাপ কেনা হলো। একটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে হলমার্কসে আসতেই পড়লাম বিশাল জ্যামে। অন্যদিন হলে ইতোমধ্যে জ্যামকে কয়েক দফা গালিগালাজ করা হয়ে যেতো। কিন্তু আজ আমার সবকিছুই ভালো লাগছে । সব কিছু ।
একটা লাভ শেইপড ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক কুপারস থেকে কিনে সোজা বাসা । পুরাটা ঘর সাজাতে হবে । আসিফের পছন্দের সব আইটেম আমাকে রান্না করতে হবে । অনেক কাজ ।

Post Comment

কিছু মুহূর্ত ভালবাসার সাথে....

বাস-স্ট্যান্ড এ অনেক রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচেছ, বিরক্ত লাগছে। অবশ্য সিলেট যাওয়ার সময় সব সময় বিরক্ত লাগে এনির,এতদিন হয়ে গেল তবু ক্যাম্পাস, হল এখনো খুব বেশি আপন হতে পারে নাই। বাসা থেকে যাবার সময় প্রতিবার মন খারাপ হয়। মোবাইল বাজছে, মনে হয় সবুজ ফোন দিচেছ। এই সময় ফোন দেয় কেন? বাসা থেকে বের হবার সময় তো বলছি একটূ পর বাসে উঠব। এই ছেলের ফোন দেয়ার কোন ঠিক ঠিকানা নাই, কখনো তিন চার দিন কোন খোজ নেই, কোন ফোন নেই, আবার কখনো তিন চার মিনিট পর পর ফোন। ফোনটা রিসিভ করল এনি,
এনি, হ্যালো;
সবুজ, কই তুমি;
এনি, কই আবার থাকব, বাস-স্ট্যান্ডে ; তোমারে না একটু আগে বললাম বাস-স্ট্যান্ডে  যাই ১০ টার বাসে সিলেট যাব;
সবুজ, ও হ্যাঁ, বলছিলা তো আছা যাও। রাখি।

সবুজ ফোন টা রেখে দিল। বাস এখনো আসে নাই আরেকটু কথা বললে কি হতো। কিন্তু এই ছেলে এমনি ,কখন এনি তার সাথে কথা বলতে চায়, কখন এনি তাকে একটু কাছে চায় কখনই বুঝে না । মাঝে মাঝে মনে হয় এই ছেলের সাথে তার যে সম্পর্ক তা যে কিসের এনি নিজেও জানেনা।

Post Comment

আহ ...

সুরজিতের মনে হল একফোঁটা বৃষ্টি পড়ল। হ্যাঁ, বৃষ্টিই তো! এইতো জারুল গাছটার নিচে ছোট লজ্জাবতীর পাতার উপর একফোঁটা বৃষ্টি জমে আছে। টলটলে ফোঁটাটা সদ্যজাত। ধুলায় ধূসরিত লজ্জাবতীর পাতায় নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না। এই বুঝি পড়ে যাবে। মাটিতে গিয়ে মিশে যাবে চিরতরে। যখন বৃষ্টি ফোঁটাটা মাটিতে পড়বে ঠিক তখনই সুরজিতের মনে হল সত্যি বৃষ্টি পড়ছে। এক ফোঁটা বৃষ্টি তার বা হাতের কব্জিতে পড়েছে। এইতো সেই বৃষ্টি। 

বৃষ্টির কথা মনে হলে সুরজিতের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে খুব। বৃষ্টি শুরু হলে তাকে ঘরে ধরে রাখা যেত না কখনো। ঝড়ে পড়ে থাকা আম কুড়াতে গিয়ে একদিন তার মনে হল হয়তো মানুষের জীবনটাই এমন। অপেক্ষা করে ঝড়ে যাওয়ার জন্য। এভাবেই সে চিঠি লিখেছিল বালিকাকে। স্কুল পেড়োনো বালিকাটি প্রতি সপ্তাহে চিঠি লিখত সুরজিতকে। বালিকা ঝড়ে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হতে পারেনি। তার যুক্তি শুধু ঝড়ে যাওয়া কেন, ঝড়ে যাওয়ার পূর্বে জীবনটা কি অনেক সুখের নয়? সুরজিত মেনে নিয়েছিল বালিকার কথা, মনে নিয়েছিল কি না তা জানি না তবে সে খুব সুন্দর কবিতা লিখেছিল এ ঝড়ে যাওয়া নিয়ে। বালিকার তখন বেজায় রাগ সুরজিতের উপর। কেন সে ঝড়ে যাওয়া নিয়ে কবিতা লিখবে? সে কেন বালিকাকে নিয়ে কিছু লেখে না? বালিকা অপেক্ষায় থাকে।

Post Comment

বিয়ে বাড়ি আর আমার গালে রমণীর পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ।

বিয়ে বাড়ি। চারিদিকে হৈ হুল্লোর। সবার মাঝে কেমন যেন উৎসবের আমেজ। হাসি ঠাট্টা, রঙ তামাশা সবাইকে ছাপিয়ে যায়। কিশোর কিশোরী ছেলে মেয়েদের জন্য বিয়ে বাড়িটা সবথেকে মজার স্থান। আমারও ভালো লাগে। অন্তত সবার মুখে হাসি দেখা যায়। আসলে দেখতে দেখতে কখন যে আমার বিয়ের বয়স হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। সরকারি হিসেবে ছেলেদের বিয়ে করার নূন্যতম বয়স একুশ বছর, আমার চলছে সাড়ে চব্বিশ। পড়াশোনা শেষ করে মাত্র একটা চাকরীতে ঢুকলাম।ঠিক চাকরী না, একটা বেসরকারী ব্যান্কে ইন্টার্নীতে আছি। আমি নিজেই বুঝতে পারি আমার বিয়ের বয়স হয়েছে, কারন এখন মেয়েদের সাথে প্রেম প্রেম খেলে আগের মত মজা পাই না। আজ গায়ে হলুদ। কিন্তু ভীষন আক্ষেপের বিষয় হল বিয়েটা আমার না। আমার মেঝ মামার বড় ছেলের বিয়ে। একদিন আগে থেকেই আমরা সবাই মেঝ মামার বাড়িতে। বিশাল তিনতলা বাড়ি, ঢাকা শহরে আমার মামার বাড়িটিই যৌথ পরিবারের জন্য বেস্ট বলে আমার কাছে মনে হয়। আর চার মামার একমাত্র বোনের একমাত্র ছেলে হওয়াতে আমার কদর অন্যরকম।  বিয়ের বাজেটের একটা অংশ আমার হাতে দেয়া হয়েছে ডেকোরেশন জন্য। নিজেকে খুব দ্বায়িত্বশীল ছেলে বলবো না। কারন? একটু পরেই জানবেন।

সকাল থেকেই মন মেজাজ একশো তিন ডিগ্রি গরম। এদিকে এবার বেশ গরমও পড়েছে। আবহাওয়া অফিসে এসি চলে তাই তারা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে, আমার মনে হচ্ছে কম হলেও ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে। আমার মেজাজ গরম হওয়ার অবশ্য অন্য একটি কারন আছে। এত আশা নিয়ে বিয়ে বাড়িতে এলাম, অথচ এখনো কোন সুন্দরী মেয়ে দেখলাম না ! এটা কেমন কথা?

বিকেল হয়ে এসেছে। মন খারাপ নিয়েই কাজিনদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলাম বাড়ির ছাদে। স্টেজ সাজাতে হবে। বিয়ে বাড়িতে যে স্টেজ সাজায় তার দিকে সবার একটা এক্সট্রা নজর থাকে, বিশেষ করে মেয়েদের। মেয়েরা দ্বায়িত্বশীল ছেলে ভালোবাসে, কিন্তু স্টেজ সাজানো যে খুব একটা দ্বায়িত্বের কাজ সেইটা আমার কাছে মনে হয় না। আড্ডায় প্রান পাচ্ছি না, তাই ছাদের একপাশে রেলিং এর কাছে যেয়ে উদাস প্রেমিকের ভঙ্গীতে দাড়ালাম। নীচে চোখ পড়তেই আমার চোখ ছানাবরা। এ কি দেখলাম আমি! এও কি সম্ভব! একটা মেয়ে এত্ত সুন্দর হতে পারে? আহা! কি সুন্দর চোখ, সুইটেবাল নাক, মিষ্টি ঠোঁট, রেশমি চুল, কি সুন্দর ফিগার,  মেয়েতো নয় যেন টইটম্বুর ভরা কলসি!  কেয়ামতের আগে এই শেষ সময়ে এত সুন্দর মেয়ে খোদা কিভাবে বানালো? কিভাবে ? পুরাই টাস্কি খাইয়া গেলাম।

রিনিঝিনি সূর তুলে ভারা কলসি আমাদের বিয়ে বাড়িতেই আসছে। নিশ্চই বিয়েতে ইনভাইটেড। আমার শীতের ঝরা পাতা যেন হঠাৎ করেই দুইমাস এগিয়ে বসন্ত ছুঁয়ে দিলো। প্রান ফিরে পেলাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে  ভরা কলসি নীচ থেকে আমার দিকে তাকালো। আমার চারিদিকে হিন্দি সিনেমার মত ঝরো বাতাস আর গোলাপের পাপড়ি উড়ে যেতে লাগলো। ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক, " জাব সে তেরে ন্যায়না মেরে ন্যানোসে লাগে রে...."

এরই মধ্যে কখন যে আমার এক চামবাজ মামাত ভাই এসে আমার পাশে দাড়িয়েছে খেয়াল করিনি। বদমাস আমাকে খোঁচা দিয়ে বললো, " ভাই, মাইয়াটা জাস্তি, তাই না?" নাহ, এইটা সহ্য করা যায় না। আমি মামাত ভাইকে স্ট্রেট বললাম, " দেখ আমার নজর পরছে এই মেয়ের উপরে, সুতরাং এইটা তোর ভাবি। সাবধান।" এইবার হারামি বাংলা সিনেমার ভিলেনের হাসি দিয়ে বললো, " এই মেয়ে আমার কাজিন হয়। আমার চাচার মেয়ে।"

কিছুক্ষন পরে ভরা কলসি ছাদে এসে হাজির, আর আমি হা করে তাকিয়ে আছি। আমার হার্টবিট বেড়ে গেছে আর ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক বাজতেছে," এক লারকি কো দেখা তো এইসা লাগা......।" আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে জেরিন, মৌমি, তুশি কিংবা অবনীর সাথে প্রেম করার সময়তো আমার এমন ফিলিংস হয় নাই! কিন্তু এই মেয়েকে দেখেই আমার চারপাশে কেমন অদৃশ্য রোমান্টিক গান বাজতে থাকে। তাহলে কি আমি সত্যি প্রেমে পরে গেলাম নাকি? অ্যা বার্নিং কোশ্চেন!

Post Comment

কিছুটা প্রেম আর বাকীটা ভালোবাসা

মুখ ভার করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো বৃষ্টি। আমাকে চমকে দিয়ে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেই ফেললো , " আমি তোমাকে ভালোবাসি" ; ঘটনার আকস্মিকতায় আমি ততক্ষনে বোকা বনে গেছি। চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ দেখছে নাকি। কোনভাবে বৃষ্টির বাহুবন্ধন ছারিয়ে দৌড়ে পাশের ঘরে আম্মুর কাছে গেলাম। সেখানে আম্মু আর বৃষ্টির মা গল্প করছিলেন। আমি আম্মুর কোলে যেয়ে কাঁদো কাদোঁ হয়ে বলে দিলাম, "আম্মু বৃষ্টি বলে ও নাকি আমাকে ভালোবাসে। আমাকে ছারা নাকি বাঁচবে না। আমার এখন কি হবে আম্মু। ও কত পঁচা মেয়ে।" আমি হাউ মাউ করে কেঁদেই ফেললাম। আমার কান্না না থামিয়ে দুই মহিয়সী নারী তখন আমার কথা শুনে অট্টহাসিতে ব্যাস্ত।


আমার বয়স তখন সাত কি আট বছর আর বৃষ্টি পাঁচের আশেপাশে। সেই বয়সে আমি সুকুমার রায় কিংবা তিন গোয়েন্দা পড়ে বিশাল জ্ঞানী আর বৃষ্টি সারাদিন বাংলা আর হিন্দি সিনেমা দেখে ভীষন রোমান্টিক মেয়ে। আমাকে দেখলেই গান শুরু করতো, " তুম পাস আয়ে, ইউ মুজকো রায়ে..." বৃষ্টির আচার আচরন তেমন পছন্দ না করলেও বৃষ্টিকে ছারা আমার কোন উপায় ছিল না। চারদেয়ালের বন্দী জীবনে বৃষ্টিই ছিল আমার খেলার সাথী অথবা বলা যেতে পারে সবথেকে ভালো বন্ধু। আমি যখন ওকে হারকিউলিসের অভিযানের গল্প শোনাতে চাইতাম ও উল্টা আমাকে হিন্দী মুভির রিভিউ শুনিয়ে দিতো। খুব ভালো নাচতে পারতো, হাত পা কোমড় দুলিয়ে নেচেও দেখাতো। মাঝে মাঝে গলার ওড়না ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কি একরকমের নাচ দিত যা সেই বয়সে আমার জ্ঞানের বাইরে ছিল। দু একবার সর্প নাগিনের নাচ দেখার সৌভাগ্যও আমার হয়েছিল।

Post Comment

ম্যানচেষ্টার সিটি শপিংয়ে ঘুরছিলাম। ভালো একটা শার্ট কিনতে হবে। সাথে আছে বন্ধু স্যাম। সাদা চামড়ার বিদেশি নাম হলেও সে আমার ছোট বেলার বন্ধু। বাইরে এসে সামিউল থেকে স্যাম হয়েছে। দেশের পড়ালেখা শেষ করে দুজন একসাথেই বাইরে পারি জমিয়েছিলাম ইংল্যান্ডে। একটা কোম্পানীতে ফিন্যান্সে কাজ করছি। সপ্তাহে ছুটির দিন রবিবার। সুতরাং বাকি ছয়দিন যে যেখানেই থাকিনা কেন, এই দিনটা দুজনে একসাথে কাটাই। আজকেও বেরিয়েছি দুজনে। নেটে দেখেছিলাম রিভার আইল্যান্ডে আমার প্রিয় চেকে একটা শার্ট। সেটাই নিতে এসেছি মূলত। সেল উইক চলছে, তাই শোরুমে একটু ভিড় ছিল। ঠেলেঠুলে পেছন দিকটায় যেয়ে খুঁজছিলাম কমলা আর কালো চেকের শার্টটা। হঠাৎ করেই চোখ পরলো সাদা স্যালোয়ার কামিজের একটি মেয়ের দিকে। পেছন থেকে দেখতে বাঙালি মেয়ের মত লাগছে। কিন্তু মেয়েটার চুলগুল কেমন যেন চেনা। আগে কোথাও দেখেছি মনে হচ্ছে। 

মেয়েটি আমার দিকে ঘুরতেই অবাক হয়ে গেলাম। মেয়েটির হাতে আমার পছন্দের সেই শার্ট। আসলে অবাক হওয়ার কারন শার্ট নয়। চুলগুল আমি ঠিকই চিনেছি। নিতি ! নিতি আর আমি একসাথেই পড়তাম। আমি ছিলাম ভার্সিটির সুপারম্যান আর নিতি সাধারন কালো ফ্রেমের চশমা পরা চুপচাপ একটা মেয়ে। গায়ের বর্ন হলদে সাদা আর ছিপছিপে শরীর। চেহারার মাঝে অন্যরকম একটা মাধুর্য। আমি কোনদিনই ওর কাছে বিশেষ পাত্তা পাইনি। দুইবার প্রপোজ করেছি, দুইবারই ভয়ে কেঁদে দিয়েছে। সে কি কান্ড। বাংলা সিনেমার ভিলেনের সামনেও নায়িকা ইজ্জত ভিক্ষা চেয়ে এতখানি কাঁদে না। নিরহ এই মেয়েটাকে জ্বালাতন করতেই আমার কেমন যেন ভালো লাগতো। 

Post Comment

তারার দেশের রানী.......

তারার দেশের রানী.......
(১) আচ্ছা, জীবনে প্রথমবার বাবা হওয়ার অনুভূতিটা কেমন? অবশ্য, অনেকদিনের অপেক্ষার ফসল তো ভালোই হওয়ার কথা। কিন্তু, সেই অনুভূতির ছোঁয়া পাওয়ার জন্যে অপেক্ষার সময়টা? এই সময়টা বোধ হয় সবচেয়ে উৎকণ্ঠায় কাটে! হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দুশ্চিন্তায় নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে আসছিলো আমার! বারবার শুধু সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করছিলাম। শান্তাকে ওরা ভেতরে নিয়ে গেছে। কিন্তু, কোন খবর এখনো দিচ্ছে না কেন? ঘড়ি দেখলাম। মাত্র পাঁচ মিনিট হয়েছে! অপেক্ষার ক্ষেত্রে সময়টা হয়তো, সবসময় থমকে দাঁড়ায়! নিকোটিনের প্রচণ্ড অভাব বোধ করছি এই মুহূর্তে! হাসপাতালের ভেতর দাঁড়িয়ে সিগারেট খাওয়া সম্ভব না। কিন্তু, দুশ্চিন্তার কারণে বাইরেও যেতে পারছি না। আর সেই একই কারণেই হয়তো, ঘামতে শুরু করলাম! হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে! গলাটাও শুকিয়ে আসছে আমার! আমার অবস্থাটা বুঝেই কিনা কে জানে...... মা বলল, “বাবা, তুই বাইরে থেকে একটু ঘুরে আয়। এতো চিন্তা করিস না। আল্লাহ্ ভরসা। আর আমি তো আছিই এখানে।” মায়ের কথায় যেকোনো সন্তানই সত্যিকার ভরসা পায়। অনেক দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়েও তাই একটু সময়ের জন্যে বাইরে বেরিয়ে আসলাম। যাক, ভালোই হল। এই ফাঁকে একটা সিগারেট ধরিয়ে ফেলা যাবে। ধূমপায়ী মানুষ মাত্রই জানে, দুশ্চিন্তায় সিগারেটের ভূমিকা কেমন! ঠিক এই সময়, দৃশ্যটা চোখে পড়লো আমার! সাইরেন বাজাতে বাজাতে একটা অ্যাম্বুলেন্স এসে থামলো হাসপাতালের গেটে। হঠাৎ, শুরু হল সবার প্রচণ্ড ব্যস্ততা! অজ্ঞান হয়ে যাওয়া রোগীকে নামিয়ে আনলো স্ট্রেচারে করে। তড়িঘড়ি করে নিয়ে যাচ্ছে ইমারজেন্সি রুমের দিকে। রোগীর মুখের দিকের চোখ পড়তেই থমকে গেলাম আমি......... রূপা!!! চোখে পুরু কাঁচের চশমা দেওয়া একজনকে দেখলাম। মোটাসোটা শরীর। ভদ্রগোছের চেহারা। বোঝাই যাচ্ছে, যথেষ্ট ধনী। সম্ভবত, রূপার স্বামী। রূপার মত মায়াবতী মেয়েদের স্বামী তো এমনই হওয়া উচিৎ! বেচারার অবস্থা দেখে আমারই খারাপ লাগতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর পর চোখ মুছছে। আমার মত স্বার্থপর না এই লোকটা। রূপাকে হয়তো অনেক ভালোবাসে। চোখের এই জল নিখাদ ভালোবাসার না হয়ে পারে না! এই কান্না তো আমিই চিনবো! ভালোবাসার কান্না যে আমার জীবনেও একবার এসেছিলো.........

Post Comment

শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন বাজেটের অপেক্ষায় কিং খান

পুরো দেশের সঙ্গে এবারের বাজেটের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খানও। কেননা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট২০১৫ পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
বাজেট সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শাহরুখ বলেন, ‘‘একজন অভিনেতাকে বাজেটের ব্যাপারে প্রশ্ন করা সত্যিই খুব অদ্ভুত। আমাকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন না করতে অনুরোধ করছি। আমি এটাকে সম্মান করি। দেশের অর্থনীতির জন্য বাজেট পেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করব এই বছর বাজেটে এমন কিছু থাকবে যাতে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি উপকৃত হবে।’’

Post Comment