টিং টিং টিং........ঘণ্টা বেজে উঠার পর ফারহানের ঘোর হঠাৎ ভেঙ্গে গেল। সারারাত অঘুমা থাকার পর এখন ক্লাস করতে আসা তার উপর আবার টিচারের বোরিং লেকচারের চেয়ে ঘুমানোটাই তার বেশি পছন্দ হল। টিফিন ছুটির পরও সে ঘুমে ব্যস্ত। হঠাৎ ঠাস!!!! কে কে বলে আচমকা দাড়িয়ে গেল ফারহান। কে যেন ওর মাথায় খুব জোরে থাপ্পর মেরেছে। আশেপাশে তো কাউকে দেখছে না কিন্তু কিছু দূরে বসে থাকা এক ক্লাসমেটের দিকে চোখ পরল। হাসছে ; একবার ফারহানের দিকে তাকিয়ে আর একবার দরজার দিকে তাকিয়ে। বুঝতে পারল যে কাজটা করেছে সে কোথায় লুকিয়ে আছে তাই আর ডানে বামে না তাকিয়ে সোজা দরজার কাছে চলে এলো ইনস্ট্যান্ট প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। দরজার কাছে এসে সমস্ত শক্তি এক করে দিল এক লাথি। আউউউউউ !!!!!! দরজার ওপাশ থেকে আসা চিৎকার শুনে ক্লাসে থাকা অন্যরা রীতিমতো ভয় পাবার উপক্রম। ফারহানতো এতক্ষণ হাসছিল কিন্তু ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা মানুষটাকে দেখার পর কোঁকড়া চুল সব সাথে সাথে খাঁড়া হয়ে গেল,হাসিটাও কোথায় যেন উধাউ হয়ে গেল। তবে আশেপাশের সবাই ইতিমধ্য হাসাহাসি শুরু করে দিলো।না হেসে যাবে কোথায় , মানুষটি যে আর কেউ ছিল না বরং ফারহানের গার্লফ্রেন্ড তিন্নি ছিল। opsssss !!!!!!
ফারহান আর তিন্নি স্কুলজীবন থেকেই একে অপরকে চেনে। পরিচয়টা ঝগড়া দিয়ে শুরু হয়েছিলো বলে পুরো স্কুলজীবনটাই কেটে গেল ঝগড়া আর মারামারিতে, স্কুলজীবনও শেষ হল শত্রুতার মধ্য দিয়ে।পরে অবশ্য একই কলেজে ভর্তি হবার পরও তাদের ঝামেলা হতো।ফারহান খুব দুষ্টু স্বভাবের, সুযোগ পেলেই লেজ ধরে টানাটানি শুরু করে দেয়।তিন্নি কিছুটা ভাব দেখাতো আর কথায় কথায় খুব রেগে যেতো কিন্তু সেও কম দুষ্টু ছিল না। এদের শত্রুতার গল্পের মোড় হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ালো এক ঈদের দিন। কাকতালিওভাবে ফারহান ও তিন্নির বাবা বন্ধু বিধায় এক ঈদের দিন তারা তিন্নিদের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলো। ঐ সুবাদে তাদের দেখা,তারপর ফ্যামিলি চাপে ভালভাবে কথা,অতঃপর ভাল বন্ধু হয়ে যাওয়া।কালের আবর্তনে আজ তাদের সম্পর্কটা আরও গভীর, একে অপরকে খুব ভালবাসে।কিন্তু মারামারি করার অভ্যাসটা যেন গেল না। গত কয়েকমাস আগে যখন ফারহান তিন্নিকে প্রপোজ করেছিল তখন রাগের মাথায় সে হাতের মোবাইলটা দিয়ে মেরে ফারহানের মাথা ফুলিয়ে দিয়েছিলো। কারণটা খুব একটা অস্বাভাবিক ছিল না, ফারহান এত দেরিতে কেন ওকে I love u বলেছিল এতেই সে ক্ষেপে গিয়েছিলো,পরে আবার নিজ হাতে বরফ লাগিয়ে দিয়েছিলো। তারপর থেকে ফারহান ওকে খুব ভয় পায়,এক আধটু দুষ্টুমি করে তবে অনেক সাবধানে।